মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস
আজ ১৭ই মে ২০২২ খ্রিস্টাব্দ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪২তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। দীর্ঘ ৬ বছর নির্বাসিত থেকে ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে বাংলাদেশে ফিরে আসেন আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধুকন্যা, জননেত্রী শেখ হাসিনা। সেদিন বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একনজর দেখার জন্য কুর্মিটোলা বিমানবন্দর থেকে শেরেবাংলা নগর এলাকাজুড়ে নেমেছিল লাখো মানুষের ঢল।

বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে দিশেহারা বাঙালী সেই দিন পেয়েছিল আলোর দিশা। পেয়েছিল নতুন দিনের আগমনী বার্তা। তাই তো, সেদিনের মেঘের গর্জন, ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ প্রকৃতি যেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের হত্যার বদলা নেওয়ার লক্ষ্যে গর্জে উঠেছিল। সেদিন লাখো মানুষের কন্ঠে ধ্বনিত হয়েছিল, স্বাধীনতার অমর স্লোগান-‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ । লাখো কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছিল, ‘শেখ হাসিনার আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’।
প্রিয় শ্রোতা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের ১০ই জানুয়ারি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঢাকা বিমানবন্দরে অবতরণের মতোই ছিল ঐতিহাসিক। ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের ১০ই জানুয়ারি, বঙ্গবন্ধুর অবতরণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নামক প্রজাতন্ত্রটি দাঁড়িয়েছিল স্বাধীনতার দৃঢ় ভিত্তির ওপর । পরবর্তীতে, ১৫ই আগস্টের কাল রাত্রিতে, হায়েনার দল যে ভিত্তিকে উপড়ে ফেলার চেষ্টায় রত হয়েছিল, শেখ হাসিনার ঢাকা বিমানবন্দরে অবতরণের মধ্য দিয়ে সেই অপচেষ্ঠা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়, জাতির পিতার আদর্শকে ধারণ ও লালনের শুভ সূচনা।
১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ওই দিনটি ছিল রোববার। সারা দেশ থেকে আসা লাখো মানুষ সেদিন তাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান, ভালোবাসায় সিক্ত হন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। ঝড়-বাদল আর জনতার আনন্দাশ্রুতে অবগাহন করে শেরেবাংলা নগরে লাখো মানুষের সংবর্ধনার জবাবে সেদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেছিলেন, ‘সব হারিয়ে আপনাদের মাঝে এসেছি, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তার আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই।’
বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশে ফেরার আগেই ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার হোটেল ইডেনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে তার অনুপস্থিতিতেই তাকে সর্বসম্মতিক্রমে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর শেখ হাসিনার পথ মসৃণ ছিল না। নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে তাকে আজকের অবস্থানে আসতে হয়েছে। দেশে ফেরার পর দীর্ঘ ৪২ বছরের রাজনৈতিক জীবনে আওয়ামী লীগ সভাপতির দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি টানা তৃতীয়বারসহ বর্তমানে চতুর্থবারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রিয় শ্রোতা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতির পিতার খুনি ও একাত্তরের নরঘাতক যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকার্য সম্পন্ন হয়েছে এবং রায় কার্যকর করা হয়েছে। তার সুযোগ্য নেতৃত্ব, যোগ্যতা, নিষ্ঠা, মেধা-মনন, দক্ষতা, সৃজনশীলতা ও দূরদর্শীতায়, এক সময়ের দারিদ্র্য-দুর্ভিক্ষে জর্জরিত যে বাংলাদেশ অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সংগ্রাম করত, সেই দেশ আজ বিশ্বজয়ের নবতর অভিযাত্রায় এগিয়ে চলছে। বিশ্বসভায় আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই স্বপ্ন-ই আজ বাস্তবায়িত হয়েছে তারই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আজকের দিনে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ বেতারের পক্ষ থেকে জানাই অকৃত্রিম শুভেচ্ছা।
——————-