মিট দ্যা প্রেস
মিট দ্যা প্রেস
আমদের কণ্ঠ- সমতল ভূমিতে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর অধিকার ও উন্নয়ন বিষয়ক অনুষ্ঠান এবং বাংলাদেশ বেতার
বাংলাদেশ বেতার বাংলাদেশের প্রাচীনতম এবং বৃহত্তম ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান। ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতে ঢাকা ধ্বনি বিস্তার কেন্দ্র নামে প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু। ১৯৪৭ পরবর্তী সময়ে রেডিও পাকিস্তান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র এবং পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশে জাতীয় এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ বেতার নামে জনস্বার্থে সম্প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। মূলত: শিক্ষা, তথ্য এবং বিনোদন, এই তিনটি বিষয়ের সমন্বয়ে অনুষ্ঠান নির্মান ও প্রচারের মাধ্যমে দেশের জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচন, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ বিনির্মানে গত সাত দশক ধরে প্রতিষ্ঠানটি সফলতার সাথে নিজ দায়িত্ব পালন করে চলেছে। বর্তমানে বাংলাদেশ বেতার শর্টওয়েভ, মিডিয়াম ওয়েভ এবং এফ এম ফ্রিকোয়েন্সিতে অনুষ্ঠান প্রচার করছে। এর বাইরে প্রতিষ্ঠানটি অনলাইন সম্প্রচার এবং স্যাটেলাইটের মাধ্যমেও অনুষ্ঠান প্রচার করে থাকে। সারা দেশে বর্তমানে ১৪ টি আঞ্চলিক বেতার কেন্দ্র এবং ৬টি বিশেষায়িত ইউনিটের মাধ্যমে অনুষ্ঠান প্রচার করে থাকে।
দেশের সকল শ্রেণী, পেশা এবং বয়সী মানুষের জন্য বাংলাদেশ বেতার অনুষ্ঠান প্রচার করে থাকে। এখানে উল্লেখ্য, দেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও অনাগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবন মানের উন্নয়ন এবং সামাজিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ বেতার নিয়মিত বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রচার করছে যেমন বাংলাদেশ বেতার ঢাকা কেন্দ্র থেকে প্রচারিত সালগিত্তাল (গারো), লেওয়া টানা (হাজং), চট্টগ্রাম কেন্দ্র থেকে পাহাড়িকা (ক্ষুদ্র ন-ৃগোষ্ঠীর), রাজশাহী কেন্দ্র থেকে মাদল (সাঁওতাল), সিলেট কেন্দ্র থেকে মৃদঙ্গ (মনিপুরী), রংপুর কেন্দ্র থেকে মহুয়া (ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর), বরিশাল কেন্দ্র থেকে পেং উয়েং (রাখাইন), ঠাকুরগাঁও কেন্দ্র থেকে শালপিয়াল (সাঁওতাল), কক্সবাজার কেন্দ্র থেকে রোরা (রাখাইন), রাঙ্গামাটি কেন্দ্র থেকে গিরিসুর, গীত পোই (চাকমা), পেদেসা অচিংজইং (মারমা), খাপাংনি খুমতাং (ত্রিপুরা), গীরা কালং (তঞ্চঙ্গ্যা), বান্দরবান কেন্দ্র থেকে গিরিসুর, উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও, বাংলাদেশ বেতার, চট্টগ্রাম কেন্দ্র থেকে পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের জন্য চাকমা, মারমা এবং ত্রিপুরা ভাষায় প্রতিদিন তিনটি করে সংবাদ বুলেটিন প্রচারিত হয়।
এই ধারাবাহিকতায়, বাংলাদেশ বেতার ও হিউম্যান রাইটস প্রোগ্রাম, ইউএনডিপি এর যৌথ উদ্যোগে Connecting voice of the ethnic and excluded minorities through radio program শীর্ষক কার্যক্রমের আওতায় সমতল ভূমিতে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর অধিকার ও উন্নয়নের লক্ষ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য তাদের নিজস্ব ভাষায় ও তাদের মাধ্যমে অনুষ্ঠান নির্মানের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। ”আমাদের কণ্ঠ” নামক এই ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে, ক্ষুদ্র ন-ৃগোষ্ঠী ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর প্রাত্যহিক জীবনের সমস্যাসমূহের সমাধান লক্ষ্যে সচেতনতা সৃষ্টির প্রয়াস রচনা করা এবং সম্ভাবনাসমূহকে আরো শাণিত করার জন্য সম্প্রদায়ের তরুণ ও যুবকদের মধ্যে নেতৃত্বের গুনাবলীর বিকাশ করাই এ অনুষ্ঠানের উদ্যেশ। সম্প্রতি বাংলাদেশ বেতারের সদর দপ্তরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর তরুণ ও যুবনেতাদের অংশগ্রহণে দুই দিন ব্যাপী বেতার অনুষ্ঠান নির্মান কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে গারো, সাঁওতাল, হাজং, খাসিয়া, মাহাতো, দলিত ও হরিজন সম্প্রদায়ের ২০ জন যুব নেতা অংশগ্রহণ করেন। দুই দিন ব্যাপী কর্মশালায় তাদের বাংলাদেশ বেতারর অনুষ্ঠান সর্ম্পকে সাম্যক ধারণা দেয়া হয় এবং হাতে কলমে বেতার অনুষ্ঠান নির্মাণ কৌশল শেখানো হয়।
১ এপ্রিল ২০১৯ থেকে প্রতি সোমবার বেলা ২:৩০মিনিটে প্রচারিত হচ্ছে ২০ মিনিট স্থিতির ”আমাদের কন্ঠ” শিরোনামে এ রেডিও ম্যাগাজিনর অনুষ্ঠান। বাণিজ্যিক কার্যক্রম, বাংলাদেশ বেতার, ঢাকা মিডিয়াম ওয়েব ৬৩০ কি:হা ও এফ এম ১০৪ মে: হা: এ অনুষ্ঠান প্রচারিত হচ্ছে। অনুষ্ঠানের বিষয়বস্তুু নির্বাচনে প্রাধান্য দেয়া হয় যেমন মাদক সমস্যা, যৌতুক সমস্যা, বেকার সমস্যা, ভাষা ও সংস্কৃতির বিলুপ্তি, ভুমি সমস্যা, সামাজিক স্বীকৃৃতির অভাব, শিক্ষা গ্রহণে প্রতিবন্ধকতা, নাগরিক অধিকার বিষয়ে সচেতনতার অভাব ইত্যাদি নানা বিষয়। এ অনুষ্ঠানের জন্য ইতোমধ্যে চ্যানেল আই সেরা কণ্ঠ ও ক্লোজ আপ তারকাদের দিয়ে হাজং, গারো, খাসি ও সাঁওতাল ভাষার সংমিশ্রনে একটি টাইটেল সং নির্মান করা হয়েছে। এছাড়া, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অধিকার ও উন্নয়ন বিষয়ে বিভিন্ন গোষ্ঠীর ভাষার মিশ্রনে একটি গান নির্মান করা হয়েছে। ফেরদৌস হোসেন ভ’ইয়ার কথায়, বিশিষ্ঠ সুরকার ফরিদ আহমেদের সুরে গানে কণ্ঠ দিয়েছেন দেশের প্রখ্যাত ও জনপ্রিয় দুই সংগীত শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন ও এ্যন্ডুকিশোর। ৫২ পর্বের বেতার ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানটি মার্চ/২০২০ সাল পর্যন্ত বাণিজ্যিক কার্যক্রম, বাংলাদেশ বেতার, ঢাকা প্রচারিত হবে। এছাড়া, বাংলাদেশ বেতারের ৫টি আঞ্চলিক কেন্দ্রে যথা রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট থেকে প্রতি মাসে একবার করে মোট ৬০ বার ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানগুলো প্রচারিত হবে। বাণিজ্যিকের পরিচালক ডি. মির শাহ আলমের সরাসরি তত্ত্বধায়নে অনুষ্ঠানগুলি প্রযোজনা করছেন, উপ পরিচালক মো: গোলাম রব্বানী।
মো: গোলাম রব্বানী
উপপরিচালক
বাংলাদেশ বেতার।
মোবাইল-০১৫৫২৪১১১৫৩